স্কুলের রি-ইউনিয়ান হবে তাই লিখতে বলা হয়েছে, ছোটোবেলায় এরকম মাথায় বাজ পড়া আর সেটা সয়ে যাওয়ার অভ্যাসটা তবু ছিল, কিন্তু এখন বাবা রে_কি লিখব,কাকে নিয়ে লিখব, বিষয়টা তবু বা মাথায় এল কিন্তু তাতে আমার বোকামো/গাধামো
সব যে প্রকাশ্যে এসে যাবে এটা ভেবেই দোনামোনা করছিলাম। তবে এই বয়সে এসে কেমন যেন নির্ভীক হয়ে গেছি।একটা ডোন্ট
কেয়ার ভাব_যে যা ভাবে ভাবুক,জীবনের সারমর্ম যেন বুঝে গেছি, কারোর কাছে কারোর
কিছু প্রমাণ করার নেই , এটা থেকেই বোঝা যায় বয়স হয়েছে ( এটাই যা একটু খারাপ ব্যাপার)।
ঘটনাটা ঘটেছিল ক্লাস ফোরে , আমাদের ক্লাস টিচার ছিলেন
শিখাদি। একদিন বললেন স্কুলের ম্যাগাজিন বেরোবে তাই লেখা চাই,তবে
এবছর একটু অন্যরকম ক্লাসে লিখতে হবে, ৪৫ মিনিটের একটা গোটা ক্লাসের
মধ্যে শেষ করতে হবে। বাড়ী থেকে লিখে এনে জমা
দেওয়ার উপায় নেই, এই উপায় থাকলে বেঁচে যেতাম তাহলে জমা দিতাম না, সব চুল ছিঁড়ে ফেললেও আমার প্রতিভা যে শূন্য আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে অনেক আগেই সেটা বুঝে গেছি - সেদিন বেরোবার উপায় ছিল না। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি সবাই ঘাড় গুঁজে মন
দিয়ে লিখছে।বেশী আবার তাকানো যাবে না, নয়তো এখুনি বকুনি খাব, যাইহোক আমিও পাঠে মন
দিলাম। সাদা পাতার দিকেই বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম আবার সেদিন কিছু না লিখলেও প্রেস্টিজ থাকবে না, সেই সময় ও কিন্তু প্রেস্টিজ জ্ঞানটা ভালোই ছিল, সেদিন যে কি হল আমার ভিতর, কে ভর করল আমার ওপর বেশ কয়েকটা
কবিতা লিখে ফেললাম
আমার নাম সুতপা
আমার আছে দুটি পা
আমি চড়ি রণপা(যদি ও এটা ডাহা মিথ্যে কথা, কিন্তু কি করব পা এর সাথে আর কিছু
মিল খুঁজে পাছিলাম না)
দাদা কে বলি দিদি
আর দিদি কে বলি দাদা
আমি একটা গাধা( এরকম অকপট স্বীকারোক্তি সেই বয়সেই হয় তবে এটাতে গাধা পাটর্টা
ওখানে সত্যি হলেও আমি দাদা দিদি র ভীতর গুলিয়ে ফেলতাম না,এটুকু বেসিক সেন্স আমার ছিল)
আমার বাড়ি দমদম
কাদায় পড়ে
মাথা হয়েছে আলুরদম
কান্ড দেখে বাবা আমায়
এনে দিলেন চমচম।
এটাই ভেবেছিলাম আমার জীবনের প্রথম ও শেষ লেখা কোনো ম্যাগাজিনের জন্য। আবার যে কখনো সেই পরিস্থিতি আসবে ভাবিনি, সেদিন আর একটা ঘটনাও ঘটেছিল সেটা নাহয় তোলা থাক পার্ট টু হিসেবে পরের রিইউনিয়নের জন্য।
No comments:
Post a Comment